৪৪) সূরা আদ দোখান ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত সংখাঃ ৫৯

0
810
Tafsir Maariful Quran (তাফসীরে মারেফুল কোরআন)
View/Print/Download: https://cdn.emedia.team/ourholyquran.com/pdf/marefulquran/44.pdf

কোরআন তেলাওয়াত

আবদুল বাসিত মুহাম্মাদ আবদুস সামাদ
আবদুর রহমান আল-সুদাইস
মিশারি রশিদ আল-আফাসি


বাংলা অনুবাদ

তাফসীরে মারেফুল কোরআন – মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ শফি (রঃ), অনুবাদঃ মাওলানা মুহিউদ্দিন খান


তাফসীর



 
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ  
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।  
 
حم

01

হা-মীম।  
 
وَالْكِتَابِ الْمُبِينِ

02

শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের।  
 
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ

03

আমি একে নাযিল করেছি। এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী।  
 
فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ

04

এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়।  
 
أَمْرًا مِّنْ عِندِنَا إِنَّا كُنَّا مُرْسِلِينَ

05

আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী।  
 
رَحْمَةً مِّن رَّبِّكَ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

06

আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।  
 
رَبِّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا إِن كُنتُم مُّوقِنِينَ

07

যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে দেখতে পাবে। তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যেবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা।  
 
لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ يُحْيِي وَيُمِيتُ رَبُّكُمْ وَرَبُّ آبَائِكُمُ الْأَوَّلِينَ

08

তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন। তিনি তোমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃ-পুরুষদেরও পালনকর্তা।  
 
بَلْ هُمْ فِي شَكٍّ يَلْعَبُونَ

09

এতদসত্ত্বেও এরা সন্দেহে পতিত হয়ে ক্রীড়া-কৌতুক করছে।  
 
فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاء بِدُخَانٍ مُّبِينٍ

10

অতএব আপনি সেই দিনের অপেক্ষা করুন, যখন আকাশ ধূয়ায় ছেয়ে যাবে।  
 
يَغْشَى النَّاسَ هَذَا عَذَابٌ أَلِيمٌ

11

যা মানুষকে ঘিরে ফেলবে। এটা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।  
 
رَبَّنَا اكْشِفْ عَنَّا الْعَذَابَ إِنَّا مُؤْمِنُونَ

12

হে আমাদের পালনকর্তা আমাদের উপর থেকে শাস্তি প্রত্যাহার করুন, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করছি।  
 
أَنَّى لَهُمُ الذِّكْرَى وَقَدْ جَاءهُمْ رَسُولٌ مُّبِينٌ

13

তারা কি করে বুঝবে, অথচ তাদের কাছে এসেছিলেন স্পষ্ট বর্ণনাকারী রসূল।  
 
ثُمَّ تَوَلَّوْا عَنْهُ وَقَالُوا مُعَلَّمٌ مَّجْنُونٌ

14

অতঃপর তারা তাকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে এবং বলে, সে তো উম্মাদ-শিখানো কথা বলে।  
 
إِنَّا كَاشِفُو الْعَذَابِ قَلِيلًا إِنَّكُمْ عَائِدُونَ

15

আমি তোমাদের উপর থেকে আযাব কিছুটা প্রত্যাহার করব, কিন্তু তোমরা পুনরায় পুনর্বস্থায় ফিরে যাবে।  
 
يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَةَ الْكُبْرَى إِنَّا مُنتَقِمُونَ

16

যেদিন আমি প্রবলভাবে ধৃত করব, সেদিন পুরোপুরি প্রতিশোধ গ্রহণ করবই।  
 
وَلَقَدْ فَتَنَّا قَبْلَهُمْ قَوْمَ فِرْعَوْنَ وَجَاءهُمْ رَسُولٌ كَرِيمٌ

17

তাদের পূর্বে আমি ফেরাউনের সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করেছি এবং তাদের কাছে আগমন করেছেন একজন সম্মানিত রসূল,  
 
أَنْ أَدُّوا إِلَيَّ عِبَادَ اللَّهِ إِنِّي لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ

18

এই মর্মে যে, আল্লাহর বান্দাদেরকে আমার কাছে অর্পণ কর। আমি তোমাদের জন্য প্রেরীত বিশ্বস্ত রসূল।  
 
وَأَنْ لَّا تَعْلُوا عَلَى اللَّهِ إِنِّي آتِيكُم بِسُلْطَانٍ مُّبِينٍ

19

আর তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করো না। আমি তোমাদের কাছে প্রকাশ্য প্রমাণ উপস্থিত করছি।  
 
وَإِنِّي عُذْتُ بِرَبِّي وَرَبِّكُمْ أَن تَرْجُمُونِ

20

তোমরা যাতে আমাকে প্রস্তরবর্ষণে হত্যা না কর, তজ্জন্যে আমি আমার পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তার শরনাপন্ন হয়েছি।  
 
وَإِنْ لَّمْ تُؤْمِنُوا لِي فَاعْتَزِلُونِ

21

তোমরা যদি আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না কর, তবে আমার কাছ থেকে দূরে থাক।  
 
فَدَعَا رَبَّهُ أَنَّ هَؤُلَاء قَوْمٌ مُّجْرِمُونَ

22

অতঃপর সে তার পালনকর্তার কাছে দোয়া করল যে, এরা অপরাধী সম্প্রদায়।  
 
فَأَسْرِ بِعِبَادِي لَيْلًا إِنَّكُم مُّتَّبَعُونَ

23

তাহলে তুমি আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিবেলায় বের হয়ে পড়। নিশ্চয় তোমাদের পশ্চাদ্ধবন করা হবে।  
 
وَاتْرُكْ الْبَحْرَ رَهْوًا إِنَّهُمْ جُندٌ مُّغْرَقُونَ

24

এবং সমুদ্রকে অচল থাকতে দাও। নিশ্চয় ওরা নিমজ্জত বাহিনী।  
 
كَمْ تَرَكُوا مِن جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ

25

তারা ছেড়ে গিয়েছিল কত উদ্যান ও প্রস্রবন,  
 
وَزُرُوعٍ وَمَقَامٍ كَرِيمٍ

26

কত শস্যক্ষেত্র ও সূরম্য স্থান।  
 
وَنَعْمَةٍ كَانُوا فِيهَا فَاكِهِينَ

27

কত সুখের উপকরণ, যাতে তারা খোশগল্প করত।  
 
كَذَلِكَ وَأَوْرَثْنَاهَا قَوْمًا آخَرِينَ

28

এমনিই হয়েছিল এবং আমি ওগুলোর মালিক করেছিলাম ভিন্ন সম্প্রদায়কে।  
 
فَمَا بَكَتْ عَلَيْهِمُ السَّمَاء وَالْأَرْضُ وَمَا كَانُوا مُنظَرِينَ

29

তাদের জন্যে ক্রন্দন করেনি আকাশ ও পৃথিবী এবং তারা অবকাশও পায়নি।  
 
وَلَقَدْ نَجَّيْنَا بَنِي إِسْرَائِيلَ مِنَ الْعَذَابِ الْمُهِينِ

30

আমি বনী-ইসরাঈলকে অপমানজনক শাস্তি থেকে উদ্ধার করছি।  
 
مِن فِرْعَوْنَ إِنَّهُ كَانَ عَالِيًا مِّنَ الْمُسْرِفِينَ

31

ফেরাউন সে ছিল সীমালংঘনকারীদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।  
 
وَلَقَدِ اخْتَرْنَاهُمْ عَلَى عِلْمٍ عَلَى الْعَالَمِينَ

32

আমি জেনেশুনে তাদেরকে বিশ্ববাসীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম।  
 
وَآتَيْنَاهُم مِّنَ الْآيَاتِ مَا فِيهِ بَلَاء مُّبِينٌ

33

এবং আমি তাদেরকে এমন নিদর্শনাবলী দিয়েছিলাম যাতে ছিল স্পষ্ট সাহায্য।  
 
إِنَّ هَؤُلَاء لَيَقُولُونَ

34

কাফেররা বলেই থাকে,  
 
إِنْ هِيَ إِلَّا مَوْتَتُنَا الْأُولَى وَمَا نَحْنُ بِمُنشَرِينَ

35

প্রথম মৃত্যুর মাধ্যমেই আমাদের সবকিছুর অবসান হবে এবং আমরা পুনরুত্থিত হব না।  
 
فَأْتُوا بِآبَائِنَا إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ

36

তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তবে আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে নিয়ে এস।  
 
أَهُمْ خَيْرٌ أَمْ قَوْمُ تُبَّعٍ وَالَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ أَهْلَكْنَاهُمْ إِنَّهُمْ كَانُوا مُجْرِمِينَ

37

ওরা শ্রেষ্ঠ, না তুব্বার সম্প্রদায় ও তাদের পূর্ববর্তীরা? আমি ওদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি। ওরা ছিল অপরাধী।  
 
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لَاعِبِينَ

38

আমি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।  
 
مَا خَلَقْنَاهُمَا إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ

39

আমি এগুলো যথাযথ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছি; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বোঝে না।  
 
إِنَّ يَوْمَ الْفَصْلِ مِيقَاتُهُمْ أَجْمَعِينَ

40

নিশ্চয় ফয়সালার দিন তাদের সবারই নির্ধারিত সময়।  
 
يَوْمَ لَا يُغْنِي مَوْلًى عَن مَّوْلًى شَيْئًا وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ

41

যেদিন কোন বন্ধুই কোন বন্ধুর উপকারে আসবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।  
 
إِلَّا مَن رَّحِمَ اللَّهُ إِنَّهُ هُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ

42

তবে আল্লাহ যার প্রতি দয়া করেন, তার কথা ভিন্ন। নিশ্চয় তিনি পরাক্রমশালী দয়াময়।  
 
إِنَّ شَجَرَةَ الزَّقُّومِ

43

নিশ্চয় যাক্কুম বৃক্ষ  
 
طَعَامُ الْأَثِيمِ

44

পাপীর খাদ্য হবে;  
 
كَالْمُهْلِ يَغْلِي فِي الْبُطُونِ

45

গলিত তাম্রের মত পেটে ফুটতে থাকবে।  
 
كَغَلْيِ الْحَمِيمِ

46

যেমন ফুটে পানি।  
 
خُذُوهُ فَاعْتِلُوهُ إِلَى سَوَاء الْجَحِيمِ

47

একে ধর এবং টেনে নিয়ে যাও জাহান্নামের মধ্যস্থলে,  
 
ثُمَّ صُبُّوا فَوْقَ رَأْسِهِ مِنْ عَذَابِ الْحَمِيمِ

48

অতঃপর তার মাথার উপর ফুটন্ত পানির আযাব ঢেলে দাও,  
 
ذُقْ إِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ الْكَرِيمُ

49

স্বাদ গ্রহণ কর, তুমি তো সম্মানিত, সম্ভ্রান্ত।  
 
إِنَّ هَذَا مَا كُنتُم بِهِ تَمْتَرُونَ

50

এ সম্পর্কে তোমরা সন্দেহে পতিত ছিলে।  
 
إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي مَقَامٍ أَمِينٍ

51

নিশ্চয় খোদাভীরুরা নিরাপদ স্থানে থাকবে-  
 
فِي جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ

52

উদ্যানরাজি ও নির্ঝরিণীসমূহে।  
 
يَلْبَسُونَ مِن سُندُسٍ وَإِسْتَبْرَقٍ مُّتَقَابِلِينَ

53

তারা পরিধান করবে চিকন ও পুরু রেশমীবস্ত্র, মুখোমুখি হয়ে বসবে।  
 
كَذَلِكَ وَزَوَّجْنَاهُم بِحُورٍ عِينٍ

54

এরূপই হবে এবং আমি তাদেরকে আনতলোচনা স্ত্রী দেব।  
 
يَدْعُونَ فِيهَا بِكُلِّ فَاكِهَةٍ آمِنِينَ

55

তারা সেখানে শান্ত মনে বিভিন্ন ফল-মূল আনতে বলবে।  
 
لَا يَذُوقُونَ فِيهَا الْمَوْتَ إِلَّا الْمَوْتَةَ الْأُولَى وَوَقَاهُمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ

56

তারা সেখানে মৃত্যু আস্বাদন করবে না, প্রথম মৃত্যু ব্যতীত এবং আপনার পালনকর্তা তাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করবেন।  
 
فَضْلًا مِّن رَّبِّكَ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ

57

আপনার পালনকর্তার কৃপায় এটাই মহা সাফল্য।  
 
فَإِنَّمَا يَسَّرْنَاهُ بِلِسَانِكَ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ

58

আমি আপনার ভাষায় কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা স্মরণ রাখে।  
 
فَارْتَقِبْ إِنَّهُم مُّرْتَقِبُونَ

59

অতএব, আপনি অপেক্ষা করুন, তারাও অপেক্ষা করছে।